রাজ্যে শুরু দুর্যোগ! জেলায় জেলায় ঝড়বৃষ্টি ধেয়ে আসছে, আপনার জেলায় কেমন? – WB Weather Heavy Rain Update
রাজ্যে শুরু দুর্যোগ! জেলায় জেলায় ঝড়বৃষ্টি ধেয়ে আসছে, আপনার জেলায় কেমন? - WB Weather Heavy Rain Update
WB Weather Heavy Rain Update: একদিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছিল বাংলাবাসি, অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে সক্রিয় হয়েছে মৌসুমি বায়ু। আর এর প্রভাবেই একটানা বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে রাজ্যের একাধিক জেলায়। কেননা বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি নিম্নচাপ গভীর হয়ে রূপ নিয়েছে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে। এই মুহূর্তে সেটি অবস্থান করছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন বাংলাদেশের উপরী ভাগে। যার ফলে রাজ্যের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
সম্পর্কিত পোস্ট
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশে সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ, ছাত্র ছাত্রীরা হাতছাড়া করবেন নাবর্তমান আবহাওয়ার সারসংক্ষেপ
তারিখ | অবস্থা | প্রভাবিত জেলা | বৃষ্টির সম্ভাব্য পরিমাণ |
---|---|---|---|
১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) | অতি ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া | পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান | ১৫০-২০০ মিমি |
২০ জুন (শুক্রবার) | মাঝারি বৃষ্টি | কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা | ৫০-৭০ মিমি |
২১ জুন (শনিবার) | বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা | সব জেলায় ছেঁটাকাটা বৃষ্টি | ২০-৩০ মিমি |
২৪ জুন (সোমবার) | ফের ভারী বৃষ্টি | নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর | ৮০-১১০ মিমি |
কোন কোন জেলায় জারি হয়েছে সতর্কতা?
- দক্ষিণবঙ্গ: কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া, পূর্ব মেদিনীপুর
- উত্তরবঙ্গ: দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা
শহর কলকাতায় পরিস্থিতি কেমন
শহর কলকাতায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ছিল ঘন মেঘলা আকাশ। দুপুরের দিকে একাধিক দফায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিল। এদিকে বাতাসে সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা ১০০% ও সর্বনিম্ন ৯৫% – যা অত্যন্ত অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছে।এদিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৬.৫ ডিগ্রি কমছিল। রাতে তাপমাত্রা কমে হতে চলেছে ২৩ ডিগ্রি। এই স্বস্তিকর ঠান্ডা পরিবেশ যদিও শহরবাসীর কাছে তবুও আশার আলো, তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য নীচু এলাকায় জল জমার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি
বর্তমানে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ৪৫ থেকে ৫৫ কিমি প্রতি ঘন্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে তবে তা কমবেশি হতে পারে।অন্যদিকে সমুদ্র অত্যন্ত উত্তাল। রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলা এবং ওড়িশা উপকূলেও ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। যাঁরা সমুদ্রে রয়েছিলেন, তাঁদের দ্রুত তীরে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আবহাওয়া অফিসের সতর্কতা
- ⚠️ বৃষ্টির সময় খোলা জায়গায় দাঁড়াবেন না।
- ⚡ বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন বা ধাতব বস্তু ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- 🌳এই সময় বড় গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না।
- 🌊 উপকূলবর্তী জেলায় মৎস্যজীবীদের সতর্ক থাকা আবশ্যক বলে জানানো হয়েছে।
আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস
- বৃহস্পতিবার: দক্ষিণবঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা; উত্তরে বজ্রসহ হালকা বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে।
- শুক্রবার: কিছুটা স্বস্তি; বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হবে দুই বঙ্গে।
- শনিবার: এরপর ধাপে ধাপে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে; হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টির সম্ভাবনা।
- রবিবার: এইদিন উত্তরবঙ্গে ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
- সোমবার: দক্ষিণবঙ্গে নতুন করে ভারী বৃষ্টি হতে পারে ।
সরকার ও প্রশাসনের প্রস্তুতি
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের সতর্কতার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করেছে। এদিকে স্কুল বন্ধের কোনো ঘোষণা এখনো না এলেও যদি বৃষ্টির তীব্রতা বেড়ে যায়, তাহলে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ছুটি দেওয়া হতে পারে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসন এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
গ্রীষ্মের দাবদাহের পর পশ্চিমবঙ্গের আকাশে যখন স্বস্তির বৃষ্টি নামে, তখন সঙ্গে করে কিছু না কিছু বিপদও নিয়ে আসে। অতিরিক্ত বৃষ্টি যেমন কৃষির জন্য উপকারী, তেমনি শহর ও গ্রামাঞ্চলে জল জমা, গাছ পড়া, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কাও তৈরি করে থাকে। তাই আগাম সতর্কতা, সঠিক তথ্য ও সঠিক প্রস্তুতি থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব।
সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন!