লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পর আরও এক ভাতা, মাসিক ১০০০ টাকা, আবেদন ছাড়াই মহিলাদের সুযোগ – WB Lashmir Bhandar After Update
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পর আরও এক ভাতা, মাসিক ১০০০ টাকা ! রাজ্যের মহিলাদের জন্য জোড়ালো সুসংবাদ - WB Lashmir Bhandar After Update
WB Lashmir Bhandar After Update : রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি নাম ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। ২০২১ সালের আগস্টে “দুয়ারে সরকার” কর্মসূচির মাধ্যমে প্রথম শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি আজ লক্ষ লক্ষ নারীর জীবনে আর্থিক স্বস্তি এনে দিয়েছে। সম্প্রতি বিধানসভায় রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা এই প্রকল্প সম্পর্কে যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তা উল্লেখযোগ্য। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পের উপভোক্তাদের জন্য আরও এক নতুন ভাতার সুযোগ রয়েছে, যা সরাসরি এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদান করা হচ্ছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জন্য টানা ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা — বিস্তারিত জানুন -WB August Holiday Listবর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে কতজন উপকৃত?
এদিন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, ২০২৪ সালের ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন প্রায় ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৮ হাজার ৮৭৫ জন মহিলা। এককথায়, বাংলার গৃহিণী থেকে শুরু করে কর্মরত অসংখ্য নারী এই প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে কত খরচ করেছে রাজ্য?
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ পর্যন্ত এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের মোট খরচ হয়েছে ৪৮,৯৭২ কোটি টাকা। এবং ২০২৫ সালের ১০ই জুন পর্যন্ত সেই অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৬৩,৬১৫ কোটি টাকারও বেশি। অর্থাৎ এই প্রকল্পের পরিসর এবং তা রক্ষা করতে সরকারের দায়বদ্ধতা কতটা বিশাল, তা এই খরচ থেকেই স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন ও গ্রহণযোগ্যতা
প্রথমবার ২০২১ সালে “দুয়ারে সরকার” ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য বিপুল সংখ্যক আবেদন জমা পড়ে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, অধিকাংশ আবেদনকারী মহিলা আজ প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করেই চলেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং পরিবারে তাদের অবস্থানকে আরও মজবুত করতে সক্ষম হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?
সাধারণত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল কর্মহীন বা আংশিক কর্মরত মহিলাদের একটি নিশ্চিত মাসিক ভাতা প্রদান করা।
- বর্তমানে সাধারণ পরিবারের মহিলারা পান ₹১০০০
- এসসি, এসটি পরিবারের মহিলারা পান ₹১,২০০
নোট : এই ভাতা সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
৬০ বছর পার হলে মিলবে বার্ধক্য ভাতা, তাও আবার আবেদন ছাড়াই!
এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তাদের জন্য সুখবর হলো, যাদের বয়স বর্তমানে ৬০ বছর হয়ে গেছে, তারা আলাদাভাবে কোনো আবেদন না করেই সরাসরি বার্ধক্য ভাতা (Old Age Pension) পেয়ে যাবেন এমনকি ইতিমধ্যে অনেকেই পাচ্ছেন। এদিন মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, এই রূপান্তর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটে এবং রাজ্য সরকার এই নীতিকে প্রকল্পের শুরুর সময় থেকেই কার্যকর করে দিয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে, ৬ লক্ষ ৮৩৭ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে বার্ধক্য ভাতায় রুপান্তরিত হয়েছে এবং নিয়মিত সেই ভাতার টাকাও পাচ্ছে। এই ধরনের অভিনব কার্যক্রম দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোর তুলনায় পশ্চিমবঙ্গকে একটি মডেল রাজ্যে পরিণত করেছে।
ভবিষ্যতে কী আসছে?
লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের সাফল্যের ভিত্তিতে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নারী ও প্রবীণদের জন্য আরও নতুন প্রকল্প আনার পরিকল্পনায় মন্গ রয়েছে । “নারী-সুরক্ষা” ও “আর্থিক স্বাবলম্বন” – এই দুই মূল স্তম্ভকে ধরে রেখেই আগামী দিনে নতুন ভাতা বা স্কিম আসতে পারে বলে অনেকে অনুমান করছে।
আমরা কমবেশি সকলেই জানি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প আজ শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা নয়, বরং নারী সম্মান ও নিরাপত্তার প্রতীক হয়ে দাড়িয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই প্রকল্প সফলভাবে বর্তমানে কোটি কোটি নারীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এখন যখন বার্ধক্য ভাতাও এতে সংযুক্ত হয়েছে, আর এর ফলে বলা চলে এই প্রকল্প এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে গেছে।
রাজ্য সরকারের এই ধরনের উদ্যোগ সমাজে নারীদের সম্মান ও আত্মনির্ভরতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাই ভবিষ্যতে এর আরও বিস্তার ও উন্নয়ন আশা করাই যায়।