সুখবর! সেপ্টেম্বরে ফের সরকারি ছুটির বিজ্ঞপ্তি নবান্নের, দেখুন বিস্তারিত – WB Govt September Holiday Notice

WB Govt September Holiday Notice:পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জন্য একদিকে যদিও ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানা পড়া চলছে। অন্যদিকে একের পর এক ছুটির ঘোষণা করছে রাজ্য সরকার। আগস্ট মাসে যদিও বেশ কিছুদিন সরকারি ছুটি থাকছে কিন্তু তাতেও যথেষ্ট নয় সেপ্টেম্বর মাসে ফের অতিরিক্ত ছুটি নিয়ে নবান্ন কর্তৃক নোটিশ জারি করা হলে। সব মিলিয়ে সরকারি কর্মীদের জন্য ফির একবার দারুন সুযোগ হতে চলেছে। আসুন এই প্রতিবেদনে এই সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত টেনে নেওয়া যাক।

এদিলে এই সিদ্ধান্তে খুশি রাজ্যের বহু কর্মচারী, বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলের জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলোর মানুষ খুব আনন্দিত। এবছরও তাঁদের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎসবকে গুরুত্ব দিয়ে ছুটির অনুমোদন দিল রাজ্য প্রশাসন। তাহলে দেরি না করে রাজ্য সরকারের নবান্ন কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সেই ছুটি সম্পর্কে আলোচনা

সম্পর্কিত পোস্ট

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জন্য টানা ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা — বিস্তারিত জানুন -WB August Holiday List

WB Govt September Holiday Notice

অর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ছুটি কাদের জন্য প্রযোজ্য?

রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে বিশেষ করে একটি পুজোর দিন থাকায় ছুটি থাকবে নিচের সমস্ত দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে—

  1. সমস্ত সরকারি দফতর
  2. পুরসভাত্রিস্তর পঞ্চায়েত অফিস
  3. সরকার পোষিত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান
  4. রাজ্য সরকার পোষিত স্কুল, কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
  5. চা-বাগানের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কর্মীরা

নোট : তবে কলকাতা শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর যেমন Registrar of AssuranceCollector of Stamp Revenue খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তিতে।

করম পুজো: কোন উৎসব, কারা উদযাপন করেন?

করম পুজো বা করম পরব পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ জনজাতীয় উৎসবের মধ্যে একটি। এটি মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পূজা হতে চলেছে, যা রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় জাঁকজমকভাবে পালিত হয়ে থাকে।

উৎসবের স্থানবিশেষ দেওয়া হল

করম পুজো রাজ্যের নিচের জেলাগুলিতে বেশি দেখা যায়—

  1. পুরুলিয়া
  2. বাঁকুড়া
  3. ঝাড়গ্রাম
  4. পশ্চিম মেদিনীপুর
  5. বীরভূম
  6. উত্তরবঙ্গের কিছু অংশ (যেমন আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি)

এই উৎসব শহরাঞ্চলে বিশেষ ভাবে প্রচলিত না হলেও, গ্রামীণ পশ্চিমবঙ্গে এর গুরুত্ব অনেক বেশি।

উৎসবের সময় ও আচার

সাধারণত করম পুজো পালিত হয় ভাদ্র মাসের শুক্লা একাদশী তিথিতে। এই দিনে করম গাছের ডাল এনে মাটিতে পুঁতে পূজা করা হয়ে থাকে। করম দেবতা মানে “শক্তি ও প্রাচীন বনদেবতা”-কে কেন্দ্র করে এই উৎসব পালিত হয়।

করম পুজোর সময় স্থানীয় মেলা, নাচ-গান, লোকসংগীত, এবং সামাজিক মিলন মেলার আয়োজন করা হয় থাকল। এই দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে উৎসবের আনন্দ চরমে পৌঁছে যায়।

প্রথম কবে করম পুজোতে ছুটি ঘোষণা হয়?

এই উৎসবকে গুরুত্ব দিয়ে প্রথম ২০২৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ণাঙ্গ ছুটি ঘোষণা করে থাকেন। তখন থেকেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করম পুজোকে স্বীকৃতি দেওয়া শুরু হয় এবং ছুটিও দেওয়া হয়। এর আগে অনেক সময় এই দিনটি শুধুমাত্র আঞ্চলিক ছুটি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকতো, তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।

২০২৩ সালের পর থেকেই প্রতিবছর এই উৎসবের দিনে সরকারি ছুটির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে। ২০২৫ সালের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম করা হলনা।

এই ছুটির গুরুত্ব কেন বেশি?

এই ছুটির গুরুত্ব কয়েকটি দিক থেকে বিবেচনা করা যায়—

১. আদিবাসী সংস্কৃতির প্রতি সম্মান

করম পুজো একটি জনজাতি সাংস্কৃতিক উৎসব, যা দীর্ঘদিন অবহেলার শিকার হয়ে এসেছে। সরকার এই উৎসবকে ছুটি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আদিবাসী সমাজকে সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান দিকে কিছুটা এগিয়ে দিয়েছে।

২. সামাজিক সংহতি ও সম্প্রীতি

এই ধরনের ছুটির মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা বজায় থাকে। বহুত্ববাদী ভারতের অন্যতম নিদর্শন হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ।

৩. কর্মচারীদের বাড়তি বিশ্রাম

এদিকে দুর্গাপুজোর আগে কর্মচারীরা বাড়তি একদিন ছুটি পেয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন, যা কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকবে।

সরকারি ছুটির তালিকায় নতুন সংযোজন

প্রতি বছর রাজ্য সরকারের তরফে ছুটির তালিকা ঘোষণা করা হয়ে থাকে। সেখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ প্রভৃতি ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি এখন আদিবাসী উৎসবগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলনও বটে

২০২৫ সালের এই ছুটির তালিকায় করম পুজোর সংযোজন একটি বড় সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

কী বলছেন কর্মচারীরা?

অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা এই সিদ্ধান্তকে “সাহসী ও সংবেদনশীল পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন। বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলের কর্মীরা যাঁরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে পরিচিত, তাঁরা এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।

তাঁদের মতে, এটি শুধুমাত্র ছুটি নয়, নিজস্ব সংস্কৃতি ও উৎসবকে সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার আনন্দও বটে।

তাই ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ করম পুজোর দিন ছুটি ঘোষণা নিঃসন্দেহে রাজ্যের মানুষের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে। শুধুমাত্র সরকারি ছুটি নয়, এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের সমতা, সম্মান ও সংস্কৃতির মূল্যবোধে বিশ্বাসী হওয়ার প্রমাণ করে

পরিশেষে বলা যায়, আদিবাসী সমাজের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে মর্যাদা দেওয়ার এই প্রচেষ্টা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে সংহতি ও সম্প্রীতির বন্ধন আরও অটুট করবে বলেই আশা করা যায়।

আরও পড়ুন

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ও টেট ফলাফল প্রকাশ নিয়ে সবুজ সংকেত! ২০১০ OBC নিয়ম অনুযায়ী? দেখুন বিস্তারিত - WB Primary Tet 2022-23

Bongo Sathi

Bongo Sathi is an online Portal, We Daily give You content about Government Update such as Job,Scheme,Latest Announcement, Employment and Education, Banking and Others.

Related Articles

Back to top button