১৬৫ কিমি রেঞ্জ! জিন্দাল মোবিলিট্রিক R40: মধ্যবিত্তের বাজেটে দুর্দান্ত ই-স্কুটার বাজারে আসছে – Jindal Electric Scooter
এক চার্জে ১৬৫ কিমি রেঞ্জ! জিন্দাল মোবিলিট্রিক R40: মধ্যবিত্তের বাজেটে দুর্দান্ত ই-স্কুটার বাজারে আসছে - Jindal Electric Scooter range 165 kilometers
Jindal Electric Scooter : আমাদের দেশের ইলেক্ট্রিক স্কুটার বাজারে নতুন করে হাওয়া নিয়ে এল জিন্দাল মোবিলিট্রিক সংস্থা। জিন্দাল ওয়ার্ল্ডওয়াইড লিমিটেড-এর এই নতুন উদ্যোগ তাদের প্রথম ইলেকট্রিক স্কুটার R40 নিয়ে হাজির হয়েছে, যা মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের জন্য হয়ে উঠতে পারে সেরা পছন্দের একটি। এটি কেবল একবার চার্জেই ১৬৫ কিমি পর্যন্ত মাইলেজ! শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এবার বাজেটের মধ্যে থেকে ইভি কেনার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে সাধারণ মানুষের।
সম্পর্কিত পোস্ট
দক্ষিণে নেই স্বস্তি! উত্তরের জেলায় জেলায় সপ্তাহ জুড়ে ঝড়বৃষ্টি - WB Monsoon Update 2025তবে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে গই স্কুটারটি হোমোলগেশন (government approval) প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। অনুমোদন মিললেই এটি বাজারে অতি শীঘ্রই আসবে এবং জিন্দালের ৩৫টি ডিলারশিপ থেকে কিনতে পারবেন। আগামী এক বছরে এই সংখ্যা ১০০ পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাইছে এই কোম্পানি।
R40 – কী কী থাকছে এই নতুন স্কুটারে?
জিন্দাল মোবিলিট্রিক R40 ইলেকট্রিক স্কুটারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটি শহরের ট্রাফিক এবং দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য একদম উপযুক্ত হতে পারে। যা যা জানানো হয়েছে:
- রেঞ্জ: একবার চার্জে ১৬৫ কিমি (কমবেশি ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে)
- ব্যাটারি: সম্পূর্ণ ইন-হাউস প্রস্তুত ব্যাটারি, স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়েছে
- সেফটি: ব্যাটারি পারফরম্যান্স ও নিরাপত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব
- ডিজাইন: টেকসই এবং আধুনিক, মধ্যবিত্তদের প্রয়োজন মাথায় রেখেই ডিজাইন করা হয়েছে
আহমেদাবাদে তৈরি হচ্ছে ইভি বিপ্লবের ঘাঁটি
জানা যায়, এই মূহুর্তে জিন্দাল মোবিলিট্রিক-এর জন্য আহমেদাবাদে তৈরি করা হয়েছে একটি বড়সড় প্রোডাকশন হাব। বছরে ২.৫ লক্ষ যানবাহন উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে এই কেন্দ্রের বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্যাটারির জন্য পৃথক ইন-হাউস ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টও রয়েছে, যার উৎপাদন ক্ষমতা ঠিক সমান।
যার ফলে ব্যাটারির মান এবং সরবরাহ, দুটোই কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকতে চলেছে। এরফলে গ্রাহকদের জন্য গুণমানের পাশাপাশি মূল্যেও আসবে স্থিতিশীলতা।
সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করেই পরিকল্পনা
জিন্দাল ওয়ার্ল্ডওয়াইড-এর তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ইলেকট্রিক মোবিলিটি ভবিষ্যতের দিক নির্দেশ করে। আমরা যে গবেষণা ও উন্নয়ন করেছি তা সম্পূর্ণ নিজের টিম দিয়েই করেছি। আমাদের লক্ষ্য — সাধারণ মানুষের হাতেও একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ ইভি পৌঁছে দেওয়া।”
আর এদিকে টেক্সটাইল ব্যবসা থেকে বেরিয়ে ইভি-তে প্রবেশ করাটা কোম্পানির জন্য শুধুই ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটা তাদের দীর্ঘমেয়াদী স্ট্র্যাটেজির অংশও বটে। তারা বুঝে গিয়েছে, ভারতের ভবিষ্যৎ টেকনোলজি, পরিবেশ ও ব্যয় সাশ্রয়—এই তিনের সমন্বয়ে গড়ে উঠবে।
কারা কিনতে পারেন এই স্কুটারটি?
যারা:
- যারা প্রতিদিন অফিস বা কলেজ যাওয়ার জন্য স্কুটার খোঁজেন
- ব্যয় সাশ্রয়ে নজর রাখে থাকেন
- এখনও ইলেকট্রিক যানবাহনে পা রাখেননি
নোট : এদের জন্য R40 হতে পারে দুর্দান্ত সুযোগ। কারণ এতে যেমন অনেক রেঞ্জ বেশি, তেমন ব্যাটারির ওপর রয়েছে জিন্দালের গ্যারান্টি।
প্রতিযোগিতার বাজারে দাঁড়িয়ে জিন্দাল কতটা টিকবে?
এখন প্রশ্ন উঠছে, যেখানে Ola, Ather, TVS, Bajaj ইতিমধ্যেই বাজারে আছে — সেখানে জিন্দালের মতো নতুন ব্র্যান্ড কতটা টিকতে পারবে? উত্তরে বলাই যায়, যদি দাম ঠিকঠাক রাখা হয়ে থাকে এবং R40 বাজারে নির্ভরযোগ্য পারফর্ম করে, তবে মধ্যবিত্তের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয়তা পেতে সময় লাগবে না। কারণ প্রতিযোগীরা যেখানে ১.২৫ লক্ষ থেকে ১.৬ লক্ষ টাকার স্কুটার দিচ্ছে, সেখানে R40 যদি ₹৯৫,০০০ বা তার কমে আসে, তাহলে সেটা হবে গেম চেঞ্জার হতে পারে।
সম্ভাব্য দাম ও লঞ্চ
যদিও এই সংস্থার তরফে কোনও দাম প্রকাশ করা হয়নি, তবে ইন্ডাস্ট্রির অনুমান অনুযায়ী, স্কুটারটির দাম ₹৮৫,০০০ – ₹৯৫,০০০-এর মধ্যে হতে পারে। অনুমোদন মিললেই হয়তো সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর মধ্যেই আমরা এই স্কুটার রাস্তায় দেখতে পাব দেশবাসী।
একটা বিষয় পরিষ্কার — EV ইন্ডাস্ট্রি এখন আর কেবল বড় শহর বা হাই-এন্ড ব্র্যান্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। জিন্দাল মোবিলিট্রিক-এর মতো কোম্পানিগুলো বুঝে গিয়েছে, বাজারের আসল খনি আছে মধ্যবিত্ত ভারতীয়ের হাতেই। আর সেই জায়গাটাতেই তারা সঠিক লক্ষ্যভেদ করেছে।
আশা করা যায়, জিন্দাল কোম্পানির R40 শুধু আরেকটি ই-স্কুটার হয়ে থাকবে না, বরং এটি হয়ে উঠবে ভারতীয় ইলেকট্রিক রেভোলিউশনের নতুন মাইলফলক।