মাসের শুরুতেই বড় সুখবর: ফের গ্যাসের দামে হাফ সেঞ্চুরির বেশি পতন – Gas Cylinder Price drop in July
জুলাই মাসের শুরুতেই বড় সুখবর: ফের গ্যাসের দামে হাফ সেঞ্চুরির বেশি পতন - Gas Cylinder Price drop in July
Gas Cylinder Price drop in July: নতুন মাস শুরু হতেই না হতেই দেশের নাগরিকেরজ জন্য এল বড় স্বস্তির খবর। গত কয়েক মাস ধরে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে যখন দেশের বিভিন্ন জনসাধারন সহ হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং ক্যাটারিং ব্যবসায়ীরা চিন্তিত ছিল, ঠিক তখনই এলপিজি সরবরাহকারী সংস্থাগুলির তরফ থেকে ঘোষণা এল গ্যাসের দাম বেশ খানিকটা কমানো হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে বলে জানা যায়।
কত কমল দাম? স্বস্তি পেলেন ব্যবসায়ীরা
এলপিজি কোম্পানিগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলকাতায় ১৯ কেজির বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডারের দাম এর আগে ছিল ১৮০২ টাকা, যা বর্তমানে কমে হয়েছে ১৭৪৩.৫০ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি সিলিন্ডারে প্রায় ৫৮.৫০ টাকা কমেছে। দিল্লিতে যেখানে আগে এই দাম ছিল ১৭২৩ টাকা, এখন তা কমে ১৬৬৪.৫০ টাকা করা হয়েছে।
জানা যায়, এই দাম পরিবর্তন সোমবার মধ্যরাত থেকেই কার্যকর হয়েছে। বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম কমার ফলে বিশেষ করে হোটেল, রেস্তরাঁ এবং ক্যাটারিং ব্যবসার উপর কিছুটা হলেও খরচের চাপ কমতে পারে বলে জানা যাচ্ছে । একদিকে যখন কাঁচামালের দাম লাগাতার বাড়ছে, তখন গ্যাসের খরচ কমার এই খবর নিঃসন্দেহে ব্যবসায়ীদের জন্য আশার আলো জাগিয়েছে।
বছরের মধ্যে তৃতীয়বার কমল দাম
এই গ্যাসের দাম চলতি বছরে ইতিমধ্যেই তিনবার কমানো হয়েছে। এপ্রিল মাসে ৪১ টাকা কমেছিল, জুন মাসে কমে ২৪ টাকা হয়েছিল এবং এবার জুলাই মাসের শুরুতেই ফের একধাক্কায় ৫৮.৫০ টাকা কমে গেল এর দাম। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ টাকা কমলেও মার্চ মাসে দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছিল।
বিশ্ববাজারের দাম এবং আন্তর্জাতিক ক্রুড তেলের দামের ওপর নির্ভর করে প্রতি মাসে এই নতুন দাম নির্ধারণ করে এলপিজি সংস্থাগুলি। তাই দাম ওঠা-নামা এখন প্রায় মাসিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গৃহস্থালির গ্যাসের দামে পরিবর্তন নেই
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম কমলেও গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের দামে কোনও পরিবর্তন আসেনি বলে জানা যায় । এখনও বাড়ির রান্নার গ্যাসের দাম আগের মতোই রয়েছে বলে জানা যায়। অনেকেই আশা করছিলেন এবার হয়তো গৃহস্থালির গ্যাসের দামেও কিছুটা স্বস্তি মিলবে, তবে সংস্থাগুলির তরফ থেকে এমন কোনও ঘোষণা আসেনি এখন।
হোটেল-রেস্তরাঁ ও ক্যাটারিং ব্যবসায় স্বস্তি
বাণিজ্যিক গ্যাস মূলত হোটেল, রেস্তরাঁ, ক্যাটারিং সার্ভিস এবং বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় ব্যবহৃত হয়। যেহেতু খাবার তৈরি এবং বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক গ্যাস অপরিহার্য, তাই এর দাম কমা মানেই ব্যবসার খরচ কিছুটা হ্রাস করা।
বিশেষ করে যারা এলপিজি চালিত গ্যাস দিয়ে খাবার প্রস্তুতকারক, তাদের জন্য এই দাম কমার খবর অর্থনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে খাবারের দাম স্থিতিশীল রাখা কিছুটা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এলপিজি চালিত গাড়ির মালিকদের জন্যও ভালো খবর
এছাড়াও যারা এলপিজি চালিত গাড়ি ব্যবহার করেন, তাদের জন্যও বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম কমায় এই খবর স্বস্তির হবে। কারণ, গাড়ির খরচ কিছুটা হলেও কমবে। যদিও ব্যক্তিগত গাড়িতে বাণিজ্যিক গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনি কিছু বিধি নিয়ম আছে, তবুও অনেক পরিবহন সংস্থাই এই সুবিধা নিয়ে থাকেন।
সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব কতটা?
বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম কমার ফলে সরাসরি সাধারণ গৃহস্থের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ এটি মূলত বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীদের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে হোটেল ও রেস্তরাঁয় খাবারের দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করতে পারে বলে অনুমান।
যদিও পেট্রোল, ডিজেল কিংবা গৃহস্থালির গ্যাসের দামে পরিবর্তন না হওয়ায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খরচে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। তবুও ব্যবসায়িক খাতে এটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে যদি এর ফলে ব্যবহারকারীরা জিনিসের দাম কমায়।
কেন বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম ওঠানামা করে?
বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি এবং ক্রুড তেলের দামের উপর ভিত্তি করে ঠিক করা হয়ে থাকে। প্রতি মাসে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি নতুন দাম নির্ধারণ করে থাকেন।
বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম কমলে, আমদানির খরচও কমে যায়, যার প্রভাব পড়ে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেও। তেমনি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে, দেশে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়ে থাকে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, মাসের শুরুতেই বাণিজ্যিক গ্যাসের দামে এমন বড় কমতি ব্যবসায়ীদের জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তির বার্তা হতে চলেছে। যদিও সাধারণ গৃহস্থালির জন্য তেমন সুখবর নেই, তবুও বাজারের সার্বিক চাপে এই দাম কমার খবর কিছুটা হলেও স্বস্তির বার্তা বহন করেছে। ভবিষ্যতে যদি গৃহস্থালির গ্যাসের দামেও কিছুটা স্বস্তি আসে, তাহলে সাধারণ মানুষ আরও বেশি উপকৃত হবেন।