পিএম কিষাণ ও মানধন যোজনার যুগল সুবিধা: এই বয়সে ঘরে বসেই বছরে আয় হবে ৪২,০০০ টাকা : PM Kishan Mandhan Yojna 2025
পিএম কিষাণ ও মানধন যোজনার যুগল সুবিধা: এই বয়সে ঘরে বসেই বছরে আয় হবে ৪২,০০০ টাকা : PM Kishan Mandhan Yojna 2025
PM Kishan Mandhan Yojna 2025: ভারত সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক প্রকল্পের মধ্যে কৃষকদের জন্য বিশেষ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ও সুবিধাজনক স্কিম যথাক্রমে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি (PM-Kisan Samman Nidhi) এবং প্রধানমন্ত্রী কিষাণ মানধন যোজনা (PM-Kisan Maandhan)। এই দুটি স্কিমের সমন্বয়ে দেশের কোটি কোটি কৃষক তাঁদের বিশেষ সময়ে অর্থনৈতিকভাবে নিরাপত্তা পেতে পারেন।
আজকে এই প্রতিবেদনে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব কিভাবে একজন কৃষক এই দুই প্রকল্পের সুফল নিয়ে নিদিষ্ট বয়সে প্রতি বছর ঘরে বসেই ৪২,০০০ টাকা আয় করতে পারবেন।আসুন আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
সম্পর্কিত পোস্ট
Jio Lunch AC 2025: মাত্র ৫৪৯৯ টাকায় দুর্দান্ত ফিচারে জিও এসি! মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য সেরা অফারপ্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি (PM Kisan) — আর্থিক সহায়তার প্রথম ধাপ
২০১৯ সালে কেন্দ্র সরকার PM Kisan স্কিম চালু করে থাকে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে।
এই প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য:
- সাহায্যের পরিমাণ: বছরে ₹৬০০০ টাকা, যা কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি তিনটি কিস্তিতে দেওয়া হয়ে থাকে।
- লাভভোগীর যোগ্যতা: ২ হেক্টরের কম জমির মালিক কৃষকগণ এই সুবিধা পাবেন।
- অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা: সাধারণ নথিপত্র জমা দেওয়া ও আধার ভিত্তিক রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সহজেই এই স্কিমে যুক্ত হওয়া যায়।
- স্বচ্ছতা: এই স্কিমের মাধ্যমে পুরো অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়, কোনো মধ্যস্বত্বভোগী নেই।
নোট :PM Kisan প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ১২ কোটি কৃষক উপকৃত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী কিষাণ মানধন যোজনা (PM Kisan Maandhan) — নিরাপদ বৃদ্ধ বয়স্ক পেনশন
PM Kisan-এর পাশাপাশি ভারত সরকার আরও একটি স্কিম চালু করেছে যার নাম — PM Kisan Maandhan Yojana।
এই প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য:
- পেনশন সুবিধা: ৬০ বছর বয়সের পর প্রতি মাসে ₹৩০০০ পেনশন, অর্থাৎ বছরে ₹৩৬,০০০ টাকা আয় করার সুযোগ পাবেন।
- রেজিস্ট্রেশনের বয়স ও যোগ্যতা: ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক হতে হবে।
- অবদান: মাসিক ₹৫৫ থেকে ₹২০০ টাকা অর্থ জমা দিতে হয়।
- সরকারি সমর্থন: অবদানের অর্ধেক অর্থ সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে প্রদান করে।
- নথিপত্র: যাদের PM Kisan অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের আলাদা করে অতিরিক্ত ডকুমেন্ট জমা দিতে হয় না।
নোট : এই স্কিমের আওতায় ইতিমধ্যেই প্রায় ২০ লাখ কৃষক রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
দুই স্কিমের যুগল সুবিধা: একসঙ্গে ৪২,০০০ টাকা আয়
এই দুই যোজনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল — একজন কৃষক চাইলে একই সঙ্গে উভয় স্কিমের সুবিধা নিতে পারেন।
যেমন:
- আমরা সকলে PM Kisan থেকে বছরে ₹৬,০০০ টাকা পাওয়া যাবে।
- PM Kisan Maandhan থেকে ৬০ বছর বয়সের পর বছরে ₹৩৬,০০০ টাকা পেনশন পাওয়া যাবে যা মাসিক ৬ হাজার হয়।
- অর্থাৎ দুই মিলিয়ে বছরে মোট আয় হবে ₹৪২,০০০।
এই আয় বৃদ্ধ বয়সে কৃষকের নিয়মিত মাসিক খরচ মেটাতে বড় সহায়ক হবে।
সরকার কেন এই যুগল সুবিধা দিচ্ছে?
ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামোতে কৃষকের অবদান অপরিসীম রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বৃদ্ধ বয়সে কৃষকদের আর্থিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
এই দুই স্কিমের মূল লক্ষ্য হলো:
- কৃষকদের বৃদ্ধ বয়সে অর্থনৈতিক সুরক্ষা দেওয়া।
- কৃষক পরিবারে স্থিতিশীল মাসিক আয় নিশ্চিত করে দেওয়া।
- দারিদ্র্য ও ঋণের বোঝা কমিয়ে দেওয়া।
- দেশের কৃষি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা।
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া কীভাবে করবেন?
PM Kisan-এর জন্য:
- ওয়েবসাইট: pmkisan.gov.in
- আধার নম্বর, জমির নথি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস দিয়ে আবেদন।
- স্থানীয় CSC (Common Service Centre)-তেও আবেদন করা যায়।
PM Kisan Maandhan-এর জন্য:
- যাদের ইতিমধ্যে PM Kisan অ্যাকাউন্ট রয়েছে তারা সরাসরি CSC-তে গিয়ে আবেদন করতে পারেন।
- বয়স যাচাই ও প্রয়োজনীয় ফর্ম পূরণ করতে হবে ।
- মাসিক অবদানের পরিমাণ নির্ধারণ।
- e-Auto Debit ম্যান্ডেট তৈরি করে দেওয়া হবে।
অবদান কত দিতে হবে?
PM Kisan Maandhan-এ অবদান নির্ভর করে বয়সের ওপর।
বয়স | মাসিক অবদানের পরিমাণ |
---|---|
১৮ বছর | ₹৫৫ |
৪০ বছর | ₹২০০ |
এক্ষেত্রে মোট অবদান হবে বছরে ₹৬৬০ থেকে ₹২৪০০ পর্যন্ত।
এই অর্থ PM Kisan-এর অনুদান থেকেই কেটে নেওয়া হয়। কৃষকের নিজের পকেট থেকে দিতে হয় না।
৬০ বছরের পরে কী হবে?
- অবদান দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
- কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ₹৩০০০ জমা পড়বে।
- বার্ষিক আয় হবে ₹৩৬,০০০।
- এর সঙ্গে আগের মতো PM Kisan-এর ₹৬০০০ যোগ হবে।
- মোট বার্ষিক আয় দাঁড়াবে ₹৪২,০০০।
এই সুবিধা পেতে যাদের দেরি করবেন না:
যদি কোনো কৃষক এখনও এই স্কিমের আওতায় আসেননি, তবে খুব শিগগির রেজিস্ট্রেশন করে নিন। কারণ যত আগে যোগ দেবেন, অবদানের পরিমাণ তত কম হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে লাভ বেশি হবে।
বাস্তব উদাহরণ
ধরুন, কোনো কৃষক ২৫ বছর বয়সে এই স্কিমে যুক্ত হলেন।
- ৬০ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে ₹৮০ অবদান দিলেন (বয়সভেদে হিসাব আলাদা হবে)।
- অবদানকৃত টাকার অর্ধেক সরকার দেবে।
- ৬০ বছর বয়সে পৌঁছে আজীবনের জন্য প্রতি মাসে ₹৩০০০ পেনশন শুরু হবে।
- পাশাপাশি PM Kisan থেকে আগের মতোই বছরে ₹৬০০০ পাওয়া যাবে।
- ফলে মোট বার্ষিক আয় হবে ₹৪২,০০০।
ভারত সরকারের PM Kisan এবং PM Kisan Maandhan — এই দুই প্রকল্প মিলে কোটি কোটি কৃষকের জীবনে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিয়ে আসতে পারে।
মাত্র কয়েকশো টাকার অবদানে আজীবন পেনশন পাওয়ার সুযোগ খুব বেশি জায়গায় নেই। তাই সময় থাকতে রেজিস্ট্রেশন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
👉 বিশেষ দ্রষ্টব্য:
উপরোক্ত তথ্যগুলি সরকারের বর্তমান নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি। সময়ের সঙ্গে প্রকল্পের নিয়মাবলী পরিবর্তিত হতে পারে। রেজিস্ট্রেশনের আগে সর্বশেষ নির্দেশিকা দেখে নেওয়া উচিত।