জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র নিয়ে বিরাট ঘোষণা! এবার সহজেই নয় এই সার্টিফিকেট,দেখুন বিস্তারিত
WB Birth Certificate New Rule : জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র নিয়ে বিরাট ঘোষণা! এবার সহজেই নয় এই সার্টিফিকেট,দেখুন বিস্তারিত
পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের জন্য জন্ম শংসাপত্র পেতে এবার নতুন নিয়ম করলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার থেকে শুধুমাত্র পঞ্চায়েত প্রধানের সই করলেই আর জন্ম শংসাপত্র মিলবে না। রাজ্য সরকার জন্ম শংসাপত্র ইস্যুর ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা আরোপ করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এবার থেকে অতিরিক্ত যাচাই করে নতুন সার্টিফিকেট পেতে পারেন। নতুন অথোরিটির অনুমোদন ছাড়া আর কোনও জন্ম শংসাপত্র জারি করা যাবে না।
নতুন নিয়ম কেন?
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে জন্ম শংসাপত্র নিয়ে বহু জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ইতিমধ্যে পাঠানখালি গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ একাধিক অঞ্চলে এই ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে জন্ম শংসাপত্র ইস্যুর নিয়ম কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য একটাই — ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র বন্ধ করতে হবে।
নতুন নিয়মের ধাপগুলি কী?
- পঞ্চায়েত প্রধান আর সরাসরি জন্ম শংসাপত্রে সই করতে পারবেন না।
- প্রত্যেক আবেদন বিএমওএইচ-এর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে তারপর পঞ্চায়েত।
- যার নামে জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হবে, সেই শিশুর অস্তিত্ব মাঠে গিয়ে যাচাই করবেন এলাকার আশা কর্মী ।
- আশা কর্মীর রিপোর্ট জমা পড়বে বিএমওএইচ-এর দপ্তরে।
- বিএমওএইচ রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর, অনুমোদন দিলে তবেই জন্ম শংসাপত্র জারি করবে পঞ্চায়েত দপ্তর।
জন্ম-মৃত্যু পোর্টালে বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা
পুরো প্রক্রিয়াটি রাজ্যের জন্ম-মৃত্যু পোর্টালের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকবে। এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা যেমন আরও বাড়বে, তেমনই জাল নথি বা ভুয়ো আবেদন করা আরও কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে । এই সিদ্ধান্তের ফলে আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে জন্ম শংসাপত্র সংক্রান্ত দুর্নীতির ঘটনা অনেকটাই কমবে।
কেন এত কড়াকড়ি?
জন্ম শংসাপত্র এখন শুধু জন্মের প্রমাণ নয়, এটি আধার কার্ড, রেশন কার্ড, স্কুলে ভর্তি, সরকারি পরিষেবা নেওয়া — সব ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ নথিতে যদি জালিয়াতির ছোঁয়া লাগে, তাহলে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। তাই সরকারের এই নতুন পদক্ষেপ ভালো সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন প্রশাসনের একাংশ।
মানুষের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া?
নতুন নিয়ম জানার পর ইতিমধ্যে অনেকেই সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, কিছু মানুষের মতে, এই নিয়মের কারণে প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং এরফলে সাধারণ মানুষের জন্য কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। তবে অধিকাংশই মনে করছেন, যদি এতে জাল নথি বন্ধ হয় তবে এটি অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে।
রাজ্যের জন্ম শংসাপত্র ইস্যু প্রক্রিয়ায় এই নতুন কড়াকড়ি অনেকটাই স্বচ্ছতা আনবে বলে মনে করা হচ্ছে। আশা কর্মীদের মাধ্যমে ফিল্ড ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক করা এবং বিএমওএইচ-এর চূড়ান্ত অনুমোদন ছাড়া শংসাপত্র ইস্যু বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্ত নাগরিক নথি ব্যবস্থাকে আরও সুরক্ষিত এবং স্বচ্ছ করতে সহায়ক হবে।