ডিএ নিয়ে চাপে রাজ্য? সরকারি কর্মীদের জন্য ফের আসার আলো! দেখুন বিস্তারিত – WB Govt Employees DA Status August
ডিএ না পেয়ে হতাশ লাখ লাখ সরকারি কর্মচারী। এবার সুপ্রিম কোর্টের কড়া নিয়মে মামলার নিষ্পত্তির আশা জেগেছে। বিস্তারিত জানুন।
WB Govt Employees DA Status August: কমবেশি সকলে জানি, ডিএ নিয়ে বহুদিন ধরে মামলা চলছে। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী আর শিক্ষকরা এই মামলার ফলাফলের জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। আর এদিকে বারবার মামলার দিন ঠিক হলেও, তা পিছিয়ে গেছে। অনেক সময় রাজ্য সরকার শুনানির আগেই নতুন তারিখ চেয়ে নিয়েছিলেন। এর ফলে মামলাটা একেবারে থেমে ছিল।
কিন্তু এবার সুপ্রিম কোর্ট এমন একটা নিয়ম এনেছে, যার ফলে মামলার তারিখ আর সহজে পিছনো যাবে না। কর্মীদের মধ্যে তাই এখন অনেক আশা আর উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
দক্ষিণে নেই স্বস্তি! উত্তরের জেলায় জেলায় সপ্তাহ জুড়ে ঝড়বৃষ্টি - WB Monsoon Update 2025ডিএ মানে কী?
প্রথমে সংক্ষেপে বলে রাখি, ডিএ মানে হলো “মহার্ঘ ভাতা”। এটা একধরনের ভাতা, যা সরকারি কর্মীদের বেতনের সঙ্গে দেওয়া হয়ে থাকে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেন কর্মচারীদের জীবনযাত্রা বজায় থাকে, ঠিক সেই কারণে এই ভাতা দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় সরকার এই ডিএ নিয়ম করে বাড়িয়ে থাকেন। কিন্তু অন্যদিকে রাজ্য সরকার অনেকদিন ধরে বাড়াচ্ছে না, এমনই অভিযোগ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের। তাদের দাবি, এখন ২৫ শতাংশ ডিএ বকেয়া রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে
ডিএ না পাওয়ার জন্য অনেক কর্মচারী একজোট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে থাকেন। মামলাটা এখনও বিচারাধীন চলছে। কিন্তু বড় সমস্যা হলো, শুনানির দিন এলেও রাজ্য সরকার প্রায়ই শুনানি পিছিয়ে দিয়ে থাকেন।
এই কারণে বহু বছর ধরেই মামলাটি এক জায়গায় আটকে রয়েছে। তাই সরকারি কর্মীরা রায় পাচ্ছেন না, আর রাজ্য সরকারও এই বিষয়ে চুপ।
এবার বদল আনল সুপ্রিম কোর্ট
এই পরিস্থিতি দেখে এবার সুপ্রিম কোর্ট নিজেই ব্যবস্থা নিয়ে ফেললে। শুনানি পিছনো নিয়ে কড়া নিয়ম চালু করল সরকার। এখন থেকে আর কেউ চাইলেই মামলার তারিখ পিছাতে পারবে না।
নতুন নিয়মে কী কী বলা হয়েছে?
- শুনানির আগের দিন সকাল ১১টার মধ্যে শুনানি পিছনোর আবেদন জানাতে হবে।
- বিরোধী পক্ষের অনুমতি না থাকলে আদালত আবেদন গ্রহণ করবে না বলে জানানো হয়।
- যথাযথ কারণ না থাকলে শুনানি পেছানো যাবে না। যেমন, রোগ-জটিলতা, জরুরি মৃত্যু এসব ছাড়া আর কিছু গ্রহণযোগ্য হবে না।
- আবেদন করার জন্য তাদের একটা নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে।
আর এই নিয়ম সবাইকে মানতে হবে। ফলে এখন থেকে ডিএ মামলার শুনানি আর এত সহজে পিছবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
ডিএ মামলার পরবর্তী দিন: ৪ঠা আগস্ট
আমরা সকলে জানি সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে ৪ঠা আগস্ট, ২০২৫। এখন এই দিনটা কর্মচারীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
কর্মচারীদের কষ্ট
অনেক কর্মচারী বলছেন,
“আমরা মাসের পর মাস কাজ করেই চলেছি, কিন্তু ঠিকমতো ডিএ পাচ্ছি না। বাজারে সবকিছুর দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু আমাদের বেতন বাড়ছে না। ডিএ পেলে সংসারটা একটু সামলানো যেত।”
আরেকজন শিক্ষিকা বলেন,
“আমার ছেলে কলেজে পড়ে। ওর খরচ ও অন্যদিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। যদি ডিএটা ঠিকমতো পেতাম, তাহলে অনেকটাই সুবিধা হতো।”
১ অগস্ট ২০২৫ থেকে ইউপিআই-এর ৫টি বড় নিয়মে পরিবর্তন – UPI Payment August New Rule
রাজ্য সরকারের চিন্তা
সুপ্রিম কোর্টলর এই নতুন নিয়মে রাজ্য সরকারের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। এতদিন তারা মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়ে সময় নিচ্ছিল। কিন্তু এবার তারা চাইলে আর তা করতে পারবে না নতুন নির্দেশিকা অনুযায়।
রাজ্য সরকার যদি মামলায় হেরে যায়, তাহলে:
- রাজ্যকে অতিবিলম্বে কোটি কোটি টাকা বকেয়া ডিএ কর্মচারীদের দিতে হবে।
- পাশাপাশি প্রতি মাসে নতুন করে বাড়তি ডিএ চালু করতে হবে।
- এতে রাজ্য কোষাগারে চাপ অনেকটাই পড়বে।
নোট :এই কারণেই রাজ্য সরকার চায় মামলাটা যত দেরিতে হয় ততই ভালো হয়। কিন্তু এবার সেই সুযোগ হয়তো আর নেই।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই খবর সামনে আসতেই রাজ্যের রাজনীতিতে ইতিমধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে।
কিছু বিরোধী দল বলছে,
“রাজ্য সরকার ইচ্ছা করেই বকেয়া ডিএ দিচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টের নতুন নিয়ম ওদের মুখোশ খুলে দিল।”
শাসকদল অবশ্য বলছে,
“সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মানা আমাদের দায়িত্ব। আমরা কর্মীদের স্বার্থের কথাই ভাবছি।”
এবার সবার নজর সুপ্রিম কোর্টে
৪ঠা আগস্ট এখন একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন হতে চলেছে। রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক, পুলিশ কর্মী, দপ্তরের অফিসার সহ অন্যান্য সরকারি—সবাই চায় এবার একটা সিদ্ধান্ত হোক।
সুপ্রিম কোর্টের রায় যদি কর্মীদের পক্ষে যায়, তাহলে তারা শুধু বকেয়া টাকা নয়, একটা ন্যায়বিচার পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ডিএ নিয়ে এই মামলাটা কেবল টাকা-পয়সার বিষয় নয়, এটা বহু কর্মচারীর আত্মসম্মানের বিষয় হয়ে উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টের নতুন নিয়মে আশা করা যায়, এবার আর দেরি হবে না শুনানির।
রাজ্য সরকারকেও বুঝতে হবে, মানুষ সব কিছু মনে রাখে। দেরি করলে শুধু টাকা নয়, বিশ্বাস হারাতে পারে সরকার।
তাই এখন সময় এসেছে সমস্যার সমাধান করার। আর ৪ঠা আগস্ট সেই পথ দেখাতে পারে।
বার্তা: আপনার পরিবার বা বন্ধু যদি সরকারি চাকরিতে যুক্ত থাকেন, তাহলে এই প্রতিবেদনটি তাদের সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং জানার সুযোগ করে দিন। কারণ এই মামলার রায় তাদের জীবন বদলে দিতে পারে।