পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার তার অধীনে কর্মরত সকল সরকারি কর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীদের জন্য বেতন ও পেনশন বিল সংক্রান্ত নিয়মে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। রাজ্য সরকারের তরফে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, আগামী ২০২৫ সালের মে মাস থেকে প্রিন্টেড কপি জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার পরিবর্তে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা চালু হবে ডিজিটাল মাধ্যমে।

আর থাকছে না প্রিন্টেড কপি জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা
অর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী মে মাস থেকে বেতন বিল এবং মাসিক পেনশন বিলের আর প্রিন্টেড কপি অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (AGWB) দপ্তরে জমা দিতে হবে না। এবার থেকে সরকারি অফিসগুলি তাদের TR-18 ফর্মে তৈরি বেতন বিল ও অন্যান্য ভাউচার সরাসরি ডিজিটাল ফর্মে পাঠাবে।
পেনশন বিলেও থাকছে একই নিয়ম
শুধু বেতন নয়, পেনশন বিতরণকারী ট্রেজারি অফিস-গুলিকেও আর কোনো পেনশন বিলের কাগজের কপি জমা দিতে হবে না। সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মাসিক পেনশন বিল এখন থেকে WBIFMS সিস্টেমের মাধ্যমে সরাসরি ডিজিটাল মাধ্যমেই পাঠানো হবে।
উদ্দেশ্য কী রাজ্য সরকারের?
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজ্য সরকার ই-গভর্ন্যান্স এবং ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থাপনার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারি দপ্তরগুলির আর্থিক লেনদেনকে আরও স্বচ্ছ, দ্রুত ও কাগজবিহীন করার লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
WBIFMS ও AGWB মিডলওয়্যারের মধ্য দিয়ে তথ্য আদানপ্রদান
এই ব্যবস্থা চালু হলে বেতন ও পেনশন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য WBIFMS সার্ভার এবং AGWB মিডলওয়্যার-এর মাধ্যমে নিরাপদভাবে আদান-প্রদান হবে। এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে চালু রয়েছে এবং এবার তা সর্বস্তরে প্রয়োগ করা হবে।
সরকারি কর্মীদের জন্য কী সুবিধা মিলবে?
- আর কাগজের ঝামেলা থাকবে না।
- বিল তৈরি ও জমা দেওয়ার কাজ অনেক দ্রুত হবে।
- স্বচ্ছতা বাড়বে বেতন ও পেনশন প্রক্রিয়ায়।
- নথিপত্র হারানোর ঝুঁকি থাকবে না।
- স্মার্ট ও আধুনিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে রাজ্য।
মে মাস থেকেই শুরু প্রথম ধাপ
২০২৫ সালের মে মাস থেকে এই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ চালু হবে। প্রাথমিকভাবে বেতন এবং পেনশন বিলের কাগজের কপি বন্ধ করা হবে। পরবর্তী ধাপে অন্যান্য বিল ও আর্থিক কাগজপত্রের ক্ষেত্রেও এই ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করা হবে।
ডিজিটাল রূপান্তরের প্রভাব
এই পরিবর্তনের ফলে রাজ্য সরকারের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, দ্রুত ও আধুনিক হবে। এছাড়াও দীর্ঘ মেয়াদে সরকারের খরচ কমবে এবং পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থাও গড়ে উঠবে।
উপসংহার
নবান্নের এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক প্রশাসনের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেতন ও পেনশন বিলের প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় সরকারি কর্মীদের কাজ সহজ হবে এবং সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষতা ও স্বচ্ছতা আসবে। আগামী দিনে এই ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করছে রাজ্য প্রশাসন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
কবে থেকে বেতন ও পেনশন বিলের কাগজের কপি জমা বন্ধ হচ্ছে?
২০২৫ সালের মে মাস থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে।
নতুন ব্যবস্থায় বিল কীভাবে জমা দেওয়া হবে?
WBIFMS এবং AGWB মিডলওয়্যারের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিল জমা দেওয়া হবে।
এই পরিবর্তনে সরকারি কর্মীরা কী সুবিধা পাবেন?
কাজের গতি বাড়বে, ঝামেলা কমবে এবং আর্থিক লেনদেন আরও স্বচ্ছ হবে।
এই পদ্ধতি সবার জন্য বাধ্যতামূলক?
হ্যাঁ, ধাপে ধাপে সব দপ্তরে এটি বাধ্যতামূলকভাবে চালু করা হবে।