দক্ষিণে নেই স্বস্তি! উত্তরের জেলায় জেলায় সপ্তাহ জুড়ে ঝড়বৃষ্টি – WB Monsoon Update 2025
রাজ্যে দক্ষিণে নেই স্বস্তি! উত্তরের জেলায় জেলায় সপ্তাহ জুড়ে ঝড়বৃষ্টি - WB Monsoon Update 2025
WB Monsoon Update 2025: পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ফের একবার বর্ষার দাপট। নিম্নচাপের জেরে টানা কয়েকদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গে চলেছে বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার প্রকোপ। তবে মঙ্গলবার রাতের পর থেকে সেই নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে পড়েছে, এটি জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। যদিও বৃষ্টির ছুটি নেই এখনো। বুধবারও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
১৬৫ কিমি রেঞ্জ! জিন্দাল মোবিলিট্রিক R40: মধ্যবিত্তের বাজেটে দুর্দান্ত ই-স্কুটার বাজারে আসছে - Jindal Electric Scooterরাজ্যে কলকাতা সহ আশেপাশের অঞ্চলে বুধবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। মাঝে মাঝেই অল্প সল্প বৃষ্টিও হচ্ছে। বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকায় গরমের অস্বস্তি নেই বললেই চলে, তবে ভিজে থাকার অস্বস্তি রয়েছে শহরবাসীর মনে। কলকাতায় এদিন সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ২ ডিগ্রি কম আছে। মঙ্গলবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা নিচে, মাত্র ২৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আজ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে । তবে আটটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝোড়বৃষ্টির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে বলে জানা যায়। সেই জেলাগুলি হল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া সহ পুরুলিয়া। এই জেলাগুলিতে বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে বলে জানানো হয়েছে, যার গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। এই ঝড়বৃষ্টির জন্য জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
শুধু রাজ্যে দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াও এবার বেশ উত্তাল হচ্ছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর দিনাজপুরে আজ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে এই জেলাগুলিতে। এর মধ্যেই আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টি কিছুটা থামলেও সপ্তাহান্তে ফের এক দফা ভারী বর্ষার সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরের বেশ কিছু জেলাগুলিতে।
শনিবার ও রবিবার দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ফের ভারী বৃষ্টি নামতে পারে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, মালদা, দিনাজপুর সহ অন্যান্য উত্তরের জেলাগুলিতেও সপ্তাহভর বিক্ষিপ্ত ভাবে চলবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত। এই পরিস্থিতিতে চাষি থেকে শুরু করে পর্যটক, সবাইকেই কিছুটা সাবধানে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়াবিদরা।
বর্ষাকালে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলগুলিতে বৃষ্টি মানেই ধসের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই ইতিমধ্যে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটকদেরও প্রয়োজন ছাড়া পাহাড়ের রাস্তায় না বেরোনোর অনুরোধ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে জল জমে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিচ্ছে কিছু জায়গায় ।
এদিকে, বৃষ্টির জেরে শহর কলকাতায় গতি হারিয়েছে সাধারণ জনজীবন। সকাল থেকেই অফিসপাড়ায় ভিড় কিছুটা কমেছে, রাস্তাঘাটেও যান চলাচল তুলনায় কম চোখে পড়ছে। বহু মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতে চাইছেন না এইদিন। অফিসে হালকা হাজিরা, স্কুলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনায় কম।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য উন্নতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে নিম্নচাপ দুর্বল হওয়ায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আপাতত কিছুটা কমেছে। তবুও যেহেতু হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে, তাই নাগরিকদের বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে আবহাওয়া দপ্তর কর্তৃক। বিশেষত, যারা বিদ্যুৎ সংযোগ বা জল জমা জায়গায় কাজ করেন, তাঁদের প্রতি বাড়তি সতর্কতার আবেদন জানানো হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে এমন টানা বৃষ্টি একদিকে যেমন গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে, অন্যদিকে দুর্ভোগও বাড়িয়ে তুলেছে কিছুটা হলেও। আগামী কয়েকদিনের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে বর্ষার এই দাপট ঠিক কতদিন স্থায়ী হবে। ততদিন পর্যন্ত ছাতা ও রেইনকোট যেন নাগরিকদের সঙ্গী হয়ে ওঠে – এমনটাই মত আবহাওয়াবিদদের।