সুখবর! পড়ুয়াদের দিচ্ছে ১০,০০০ হাজার টাকা, বিশেষ যাচাই পদ্ধতিতে আবেদন করুন – WB Taruner Swapna Prakalpo

WB Taruner Swapna Prakalpo:  আমরা কম বেশি সকলে জানি রাজ্য সরকার রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য জনমুখী প্রকল্প নিয়ে আসেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লক্ষীর ভান্ডার, স্বাস্থ্য সাথী, খাদ্য সাথী, সবুজ সাথী, বেকার ভাতা এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে এসেছেন যার মাধ্যমে সকল প্রকার মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এবার আরো এক প্রকল্পের কথা বলতে যাচ্ছি যার নাম উপরে উল্লেখ করা হয়েছে তার সম্বন্ধে। এই প্রকল্পের সুবিধা আপনি অতি সহজে নিতে পারবেন এবং আপনাকে আলাদা করে কোন সাইবার ক্যাফে কি আবেদনও করতে হবে না।

রাজ্যের মাধ্যমিক পাস পড়ুয়াদের জন্য দারুন সুসংবাদ। কেননা আপনি যদি রাজ্যের অধীনে মাধ্যমিক পাস করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য রাজ্য সরকার কর্তৃক ১০০০০ টাকার তরুনের সপ্ন প্রকল্পের সুবিধা দিতে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনাকে দশম শ্রেণী পাস করে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হতে হবে। অবশ্যই আপনাকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং পশ্চিমবঙ্গের সরকারি যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এই শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এই প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি যাতে অতি সহজেই এই প্রকল্প আপনি পেয়ে যেতে পারেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইটি সেক্টরে ৬৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান, ইনফোসিস ও ক্যাপজেমেনি দারুণ পদক্ষেপ - IT Sector Huge Vacancy 2025

WB Taruner Swapna Prakalpo

তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প কী?

‘তরুণের স্বপ্ন’ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের একটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত, যার মূল লক্ষ্য হল একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ডিজিটাল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার প্রতিটি পড়ুয়াকে ১০,০০০ টাকা করে আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকেন, যাতে তারা ট্যাবলেট বা স্মার্টফোন কিনতে পারে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজ্য সরকার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার সুযোগকে সহজলভ্য ও সমানতালে ছড়িয়ে দিতে চলেছে।

প্রকল্প চালুর পেছনে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য

এই প্রকল্প শুরু হয় মূলত ২০২০ সালের কোভিড মহামারীর সময়, যখন সমস্ত স্কুল বন্ধ হয়ে যায় এবং অনলাইন শিক্ষাই একমাত্র ভরসা হয় তখন। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, রাজ্যের প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী যেন অনলাইন ক্লাস এবং বিভিন্ন শিক্ষামূলক অ্যাপ ব্যবহার করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। সেই লক্ষ্যেই ‘তরুণের স্বপ্ন’ নামক এই প্রকল্পের সূচনা।

২০২৫ সালে কবে টাকা দেওয়া হবে?

এদিকে ২০২৫ সালে শিক্ষাদফতর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রকল্পের টাকা, অর্থাৎ ১০,০০০ টাকা করে, সরাসরি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। তবে তার আগে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ—তথ্য যাচাই। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে স্কুলে জমা দেওয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই তথ্য যাচাই করে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে আপলোড করে থাকবে।

তথ্য যাচাইয়ের সময়সীমা

এই তথ্য যাচাইয়ের শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে ৩১ অগস্ট, ২০২৫। এই সময়সীমার মধ্যে যদি ছাত্র বা ছাত্রীদের তথ্য আপলোড না হয়, তাহলে তারা ওই বছরের প্রকল্পের টাকা পাওয়ার সুযোগ হারাতে পারেন সেই পড়ুয়া।

গতবারের অভিজ্ঞতা ও সমস্যা

যদিও ২০২৪ সালে এই প্রকল্প নিয়ে কিছু বিতর্ক দেখা গিয়েছিল। অনেক পড়ুয়ার অভিযোগ ছিল, টাকার বদলে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে বা অন্য কেও প্রতারণা করে টাকা নিয়ে নিয়েছে। এই সমস্যাকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে শিক্ষা দফতর ২০২৫ সালে আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিটি অ্যাকাউন্টের নির্ভুল ভেরিফিকেশনের জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম ও প্রক্রিয়া নির্ধারিত করা হচ্ছে। এছাড়াও, ওটিপি যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে নিশ্চিত করা হবে, যে টাকা তাদেরই অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে কিনা।

ফর্ম জমা ও তথ্য কী কী লাগবে?

প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে নিচের তথ্যগুলি দিতে হবে:

  1. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর থাকবে
  2. আধার নম্বর (যদি থাকে)
  3. অভিভাবকের নাম ও স্বাক্ষর থাকবে
  4. নিজের স্বাক্ষর সহ মুচলেকা দিতে হবে
  5. মোবাইল নম্বর (যেখানে OTP পাঠানো হবে)

নির্দেশিকা অনুযায়ী করণীয় পদক্ষেপ

শিক্ষা দফতরের পাঠানো নির্দেশিকায় মোট ২০টি ধাপ উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে:

  • পড়ুয়ার নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে
  • স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই তথ্য যাচাই করে আপলোড করবে
  • প্রতিটি পড়ুয়ার জন্য আলাদা OTP আসবে, যেটি দিয়ে ফাইনাল ভেরিফিকেশন করতে হবে
  • সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ৪ সেপ্টেম্বরের পর টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকবে

পরিশেষে বলা যায়, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প নিঃসন্দেহে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম। ডিজিটাল শিক্ষার এই যুগে ছাত্রছাত্রীদের হাত শক্ত করতে, সমান সুযোগ দিতে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে এই প্রকল্প এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে সঠিকভাবে তথ্য প্রদান, সময়মতো ফর্ম জমা এবং নির্দেশিকা মেনে চলাই ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের কাছে প্রধান দায়িত্ব হবে। যদি আপনি বা আপনার সন্তান এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পেতে চলেছেন, তাহলে সময়ের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করতে হবে এবং নিশ্চিত করুন যে, সরকার প্রদত্ত ১০,০০০ টাকা প্রকৃতই প্রাপকের অ্যাকাউন্টেই জমা পড়তে চলেছে।

আরও পড়ুন

সুখবর! সেপ্টেম্বরে ফের সরকারি ছুটির বিজ্ঞপ্তি নবান্নের, দেখুন বিস্তারিত - WB Govt September Holiday Notice