WB TET Wrong Questions Update : কোর্টে চূড়ান্ত শুনানি, নির্ধারিত হবে হাজারো পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ
WB TET Wrong Questions Update : কোর্টে চূড়ান্ত শুনানি, নির্ধারিত হবে হাজারো পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ
WB TET Wrong Questions Update: অবশেষে বহু প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে। ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার ভুল প্রশ্ন মামলার শুনানি হতে চলেছে। এই মামলার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের হাজার হাজার পরীক্ষার্থী, যারা এই পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং যাদের অনেকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই রায়ের উপর।
বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে বলে জানা যায়। মামলাটির নাম হচ্ছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ প্রাইমারি এডুকেশন বনাম মৌসুমি মিত্র’। এটি আদালতের রোজকার শুনানির প্রথম আইটেম হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, অর্থাৎ এই মামলার গুরুত্ব বিচারব্যবস্থার কাছেও অনেক বেশি।
সম্পর্কিত পোস্ট
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশে সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ, ছাত্র ছাত্রীরা হাতছাড়া করবেন নাএই মামলার মূল প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছিল যখন একদল পরীক্ষার্থী আদালতে যান অভিযোগ নিয়ে যে ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় একাধিক প্রশ্ন ছিল বিভ্রান্তিকর ও অনেক প্রশ্ন ভুলও ছিল। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নম্বর MAT ৯১৭/২০২৪ আদালতে ওঠে। প্রথমদিকে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন মামলাটি নিষ্পত্তি করলেও, পরবর্তীতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে বলা হয় যে আরও একটি বিশেষজ্ঞ মতামতের প্রয়োজন রয়েছে এই মামলায়। এরপর মামলাটি আবার শুরু হয় এবং হস্তান্তর হয় বর্তমান ডিভিশন বেঞ্চে।
আদালতের নির্দেশে গঠিত হয় একটি তৃতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। জানা গিয়েছে এই কমিটি তাদের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই আদালতে জমা দিয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে যে ইংরেজি এবং গণিত বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্নে এখনো স্পষ্ট সিদ্ধান্তে আসা যায়নি বলে বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান বা পেডাগজি সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে এটাও বলা হয়েছে যে অন্তত তিন থেকে পাঁচটি প্রশ্নে পরিষ্কারভাবে ভুল ধরা পড়েছে।
আগে যেখানে সাতটি প্রশ্নকে ভুল হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছিল, সেখানে এখন বিশেষজ্ঞ রিপোর্টে নিশ্চিতভাবে বলা হয়েছে যে তিন থেকে পাঁচটি প্রশ্ন সত্যিই ভুল ছিল। এই তথ্যই এখন মামলার রায়ের মূল ভিত্তি হয়ে উঠতে চলেছে।
এখন সবার মনে প্রশ্ন উঠছে, যদি আদালত বলে যে ওই প্রশ্নগুলো ভুল, তাহলে পরীক্ষার্থীরা কী ধরনের সুবিধা পাবেন। বিশেষজ্ঞমহলের মতে, যারা এই মামলার আবেদনকারী, তারা ভুল প্রশ্নের জন্য অতিরিক্ত নম্বর পেতে পারেন বলে জানা যায়। অর্থাৎ, যেসব পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় কেবল এক বা দুই নম্বরের জন্য বাদ পড়েছিলেন এবং ভুল প্রশ্নের কারণে পিছিয়ে গেছেন, তাদের নতুন করে উত্তীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
তবে আদালতের নির্দেশ ছাড়া কারও জন্য অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হবে না। এবং বিশেষ করে যারা এই মামলায় নাম নথিভুক্ত করেননি বা আবেদনকারী ছিলেন না, তাদের জন্য নম্বর বাড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম রয়েছে।
আগামীকাল দুপুর আড়াইটায় এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হতে চলেছে। সেই সময় আদালত বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট, পর্ষদের বক্তব্য এবং আবেদনকারীদের যুক্তি শুনবেন। এরপরেই আদালত জানাবেন তাদের মূল্যবান রায়। অনেকেই আশা করছেন, এত দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এই মামলার নিষ্পত্তি অবশেষে হবে এবং যোগ্য পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য সুবিধা ফিরে পাবেন।
এই মামলাটি প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচারের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ নজির হতে চলেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কারণ এর রায় শুধু কয়েকজন পরীক্ষার্থীর নয়, ভবিষ্যতের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কীভাবে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করা যায় তা নির্ধারণ করবে।
অনেক পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন, যদি তাদের নম্বর বাড়ে তাহলে কি নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে, কিংবা তাদের ইন্টারভিউ ডাকা হবে। এই প্রশ্নগুলির উত্তর এখনই দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ আদালতের রায় অনুযায়ী শিক্ষা দপ্তর পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীদের উচিত আগামীকাল আদালতের রায়ের দিকে নজর রাখা এবং যদি আদালত নতুন করে কোন আবেদন বা শুনানির সুযোগ দেয়, তাহলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া।
এই মামলার রায় হয়তো কারো জীবনে চাকরির দ্বার খুলে দিতে চলেছে, আবার কারো জন্য নতুনভাবে আশা তৈরি করতে চলেছে। এখন শুধু অপেক্ষা আগামীকালের, যখন আদালত জানাবে সত্যিই এই প্রশ্নগুলো ভুল ছিল কিনা এবং সেই ভিত্তিতে কী ধরনের বিচার পাওয়া উচিত।
এই রিপোর্ট নিয়মিত আপডেট করা হবে, তাই সর্বশেষ খবর পেতে আপনার প্রিয় বাংলা নিউজ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকুন।