সরকারি কর্মীদের জন্য খারাপ খবর! নতুন পে কমিশনে ফের অনিশ্চয়তা, দেখুন বিস্তারিত – New Pay Commission Update 2025
সরকারি কর্মীদের জন্য খারাপ খবর! নতুন পে কমিশনে ফের অনিশ্চয়তা, দেখুন বিস্তারিত - New Pay Commission Update 2025
New Pay Commission Update 2025: অবশেষে সরকারি কর্মীদের ফের খারাপ সংবাদ। সরকারি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয় হল নতুন পে কমিশন গঠন। দীর্ঘদিন ধরেই এর প্রতীক্ষা করছেন দেশের লক্ষ লক্ষ কর্মচারী। অনেকদিন ধরেই আশা করা হচ্ছিল যে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন পে কমিশন লাগু করা হবে। কিন্তু বর্তমানে যেসব তথ্য উঠে আসছে, তা থেকে মনে হচ্ছে এই অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জন্য টানা ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা — বিস্তারিত জানুন -WB August Holiday Listকেন তৈরি হচ্ছে বিলম্বের আশঙ্কা?
প্রথমত, এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে নতুন পে কমিশন গঠনের আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা হলেও কারা এই কমিশনের সদস্য হবেন বা কবে থেকে তারা কাজ শুরু করবেন? সে বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। এরফলে স্বাভাবিকভাবেই বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
নতুন পে কমিশনের কার্যক্রমে সময় লাগবে আরও ২ বছর?
রিপোর্ট অনুযায়ী, যে কোনো নতুন পে কমিশন গঠনের পর তাদের সুপারিশ তৈরির জন্য অন্তত ৮-১২ মাস সময় প্রয়োজন হয়ে থাকে।আর এই সময়ের মধ্যে কমিশনের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করবেন, এ নিয়ে পর্যালোচনা করবেন এবং বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করবেন। তারপর সেই রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় এক বছর সময় লাগতে পারে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কাজ শুরুই হলনা।
২০২৬ সালের জানুয়ারিতে বাস্তবায়ন কঠিন?
অনেকের ধারনা, যদি ২০২৫ সালের বর্তমান ১-২ মাসের মধ্যে নতুন পে কমিশনের Terms of Reference (ToR) চূড়ান্ত না হয়, তবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে এটি কার্যকর করা সম্ভব হবে না। অনেক অর্থনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতারাও মনে করছেন, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি বা তারও পরে এই পে কমিশন বাস্তবায়িত হতে পারে।
রিপোর্ট প্রকাশের সম্ভাব্য সময়সীমা
রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে অনুমান করা হচ্ছে, নতুন পে কমিশনের সুপারিশ ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে সরকার পেতে পারেন। এরপর প্রয়োজন হবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের সঙ্গে বাজেট বরাদ্দ এবং প্রশাসনিক অনুমোদনও। সবকিছু মিলিয়ে ২০২৭ সালের প্রথমার্ধেই নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।
কতটা বাড়বে বেতন?
যদিও এখনো পর্যন্ত নতুন পে কমিশনের সুপারিশের যথেষ্ট উপযুক্ত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে অর্থনীতিবিদদের একাংশের ধারণা, ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫ থেকে ২.৮-এর মধ্যে নির্ধারণ করা হতে পারে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৭ রয়েছে। নতুন পে কমিশন কার্যকর হলে এই হার আরও বাড়ানো হতে পারে এবং উপর নির্ভর করবে ক্যালকুলেশন।
ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর বৃদ্ধির অর্থ কী?
সাধারনত ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর বৃদ্ধির অর্থ হল মূল বেতনের উপরে অতিরিক্ত অর্থ যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া। যদি ২.৮ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর হয়, তাহলে এক কর্মচারীর প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যাদের বর্তমান বেসিক পে ৩০,০০০ টাকা, তাদের নতুন বেতন প্রায় ৪০,০০০ টাকার উপরে পৌঁছে যেতে পারে।
মহার্ঘ্য ভাতা ও নতুন পে কমিশন
আমাদের দেশে প্রতি ছয় মাস অন্তর মহার্ঘ্য ভাতা (DA) বৃদ্ধি পেয়ে ঘাকে। নতুন পে কমিশন কার্যকর হলে DA পুনর্গঠন করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বর্তমানে DA রয়েছে ৫০% এর কাছাকাছি। পে কমিশন চালু হওয়ার সময় এটি আরও বাড়তে পারে, এর ফলে কর্মচারীদের মোট বেতন আরও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে জানা যায়।
কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা
প্রতিবারের মত এবারও নতুন পে কমিশনের বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ আরও বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন ইতিমধ্যেই দ্রুত কমিশন গঠনের দাবি জানানো শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে তাদের বেতনের পুনর্মূল্যায়ন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
সরকারের অবস্থান কী?
এদিকে সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বাজেটের উপর চাপের দিকটি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। একদিকে যেমন কর্মচারীদের ন্যায্য প্রাপ্য দিতে চায় সরকার, অন্যদিকে বিশাল ব্যয়ভারও মাথায় রাখতে হচ্ছে সরকার পক্ষকে।
বকেয়া বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা
যদিও নতুন পে কমিশন বিলম্বিত হচ্ছে, তবে বাস্তবায়নের সময় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা আগের সময় থেকে বকেয়া পাওয়ার আশা রাখতে পারেন। সাধারণত পে কমিশন বাস্তবায়নের তারিখ পিছিয়ে গেলেও, নির্ধারিত তারিখ থেকে প্রযোজ্য ধরে বকেয়া বেতন প্রদান করা হয়ে থাকে।
নতুন পে কমিশন কবতে বোঝায় অষ্টম পে কমিশন, এর আগের পে কমিশন ছিল ৭ম পে কমিশন। সুতরাং, সরকারি কর্মচারীরা অধীর আগ্রহে তাদের নতুন ৮ম পে কমিশনের সুপারিশ এবং তার কার্যকরের জন্য অপেক্ষা করছেন। এখন দেখার বিষয় এটাই কবে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন গঠনের ঘোষণা আসে এবং কবে থেকে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবে রূপ পায়।
এই সংক্রান্ত আরও আপডেট পেতে নিয়মিত আমাদের সাথে থাকুন।