৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলা: কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি ও ভবিষ্যতের দিশা – WB Primary Teachers Update 2025

আমরা সকলে ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ৩২,০০০ জন প্রাথমিক শিক্ষক, যাঁদের চাকরি বাতিলের মুখে দাড়িয়ে রয়েছে । রাজ্যজুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এই ঘটনা বড়সড় প্রভাব ফেলেছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে

WB Primary Teachers Update 2025: আমরা সকলে ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ৩২,০০০ জন প্রাথমিক শিক্ষক, যাঁদের চাকরি বাতিলের মুখে দাড়িয়ে রয়েছে । রাজ্যজুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এই ঘটনা বড়সড় প্রভাব ফেলেছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

WB Primary Teachers Update 2025

মামলার প্রেক্ষাপট ও অভিযোগ

এই মামলার সূত্রপাত হয় ১৪০ জন আবেদনকারীর আবেদনের মাধ্যমে। তাঁদের অভিযোগ ছিল—

  • ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ছিল।
  • পূর্ণাঙ্গ মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
  • অনেক কম নম্বর পাওয়া প্রার্থী নিয়োগ পেয়েছেন, যাঁদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
  • একাধিক প্রার্থী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছেন।

Note :প্রথমে এটি শুধুমাত্র অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের বিষয়ে ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে মামলাটি বৃহত্তর দুর্নীতির তদন্তের দিকে মোড় নেয়। আদালতের নজরে আসে নিয়োগ সংক্রান্ত বহু গোপন তথ্য ও অসঙ্গতি।

হাইকোর্টে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের যুক্তি

শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে আইনজীবীরা দাবি করেন—

  1. আবেদনকারীরা শুরুতে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে মামলা করেন, পরে তাঁরা মামলাকে দুর্নীতির অভিযোগের দিকে ঘুরিয়ে দেন।
  2. একক বেঞ্চ সাক্ষ্য আইনের ১৬৫ ধারা প্রয়োগ করেছে, যা শুধুমাত্র বিচারবিভাগীয় আদালতে প্রযোজ্য।
  3. আদালত আবেদনকারীদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপিত হয়নি।
  4. একক বেঞ্চ সাক্ষীদের তলব করার যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছে, তাতে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ জেনে নেওয়া যাক

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী—

  • নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
  • আদালত জানিয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে, যখন কোনও জনস্বার্থ বা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের সম্ভাবনা থাকে, তখন প্রাথমিক আবেদনের বাইরেও বিচার করা যেতে পারে।
  • আদালত মনে করে, প্রমাণ না থাকলেও প্রসঙ্গভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে আদালত নিজস্ব মূল্যায়ন করতেই পারে।

এই নিয়োগে মূল বিতর্কিত বিষয়গুলি

১. অ্যাপটিটিউড পরীক্ষা: আবেদনকারীরা অভিযোগ করেন, অনেক প্রার্থী পরীক্ষা দেননি অথচ তাঁদের ফলাফলে নম্বর দেখা গেছে।

২. স্পাইরাল বাইন্ডিং করা নথি: একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যেটিতে বহু ভুল তথ্য ছিল বলে অভিযোগ ওঠে, আদালত তা গ্রহণ করেছে বলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

৩. দুর্নীতি ও সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘন: অভিযোগ রয়েছে, সংরক্ষিত শ্রেণির কোটা ও নিয়মাবলী যথাযথভাবে মানা হয়নি।

৪. একক বেঞ্চের কার্যপদ্ধতি: সাক্ষ্য আইনের প্রয়োগ, ইন্টারভিউ পদ্ধতির বিশ্লেষণ, এবং বিশেষজ্ঞ সাক্ষীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠেছে।

মামলার বর্তমান পরিস্থিতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ

  • পর্ষদের যুক্তি এখনও আদালতে পেশ করা হচ্ছে। তারা একক বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বলেছে যে, এটি পদ্ধতিগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ।
  • মামলার শুনানিতে জানা গেছে, পর্ষদের একটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের ৪৩টি, মিলিয়ে মোট ৪৪টি আপিল জমা পড়েছে।
  • এছাড়াও বহু অসফল প্রার্থীও নতুন আবেদন জমা দিয়েছেন।

আগামী শুনানির তারিখে আদালত সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায় ঘোষণা করবে। এই রায় রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

শিক্ষাক্ষেত্রে এর প্রভাব কী পরবে

এই মামলার রায় শুধুমাত্র নিয়োগ বাতিল বা বহাল রাখার বিষয়ে সীমাবদ্ধ নয়। এর মাধ্যমে রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ পদ্ধতির স্বচ্ছতা, শিক্ষকের যোগ্যতা নির্ধারণ, এবং আইনি প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এই ঘটনার পর শিক্ষা দপ্তর ও নিয়োগ সংস্থাগুলিকে আরও স্বচ্ছ, তথ্যভিত্তিক এবং প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিতে নিয়োগ পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া কেমন

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষক সংগঠন ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নিচে বিস্তারিত দেওয়া হল

  • যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
  • যারা পরীক্ষায় ভালো ফল করেও চাকরি পাননি, তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
  • সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন—“যোগ্য না হয়েও যদি কেউ চাকরি পায়, তবে ন্যায্য প্রার্থী কোথায় যাবে?”

এই মামলা রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দিয়েছে। ৩২,০০০ শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সম্ভাবনা একদিকে যেমন বহু পরিবারের জীবনে ধাক্কা দিতে পারে, অন্যদিকে এটি নিয়োগ ব্যবস্থাকে সংস্কার করার সুযোগও করে দিতে পারে।

রাজ্যের হাইকোর্টের এই মামলার পরবর্তী রায় নিয়েই এখন রাজ্যবাসীর চোখ থাকছে। আশা করা যায়, এই রায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ন্যায়সঙ্গত এবং স্বচ্ছ পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে।

তরুণের সপ্ন প্রকল্প! রাজ্যের দশম পাশ হলে পাবেন ১০ হাজার টাকা – WB Taruner Swapna Prakalpo

Bongo Sathi

Bongo Sathi is an online Portal, We Daily give You content about Government Update such as Job,Scheme,Latest Announcement, Employment and Education, Banking and Others.

Related Articles

Back to top button