রাজ্য সরকার দিচ্ছে ব্যবসা করতে টাকা, ভর্তুকি ১০ শতাংশ সঙ্গে সরকারি গ্যারেন্টার, কীভাবে দেখুন – WBBCC Scheme 2025
রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য ফের এক নয়া পদক্ষেপ, ৫ লক্ষ টাকা ঋণ দিচ্ছে সরকার
WBBCC Scheme 2025: রাজ্য সরকার রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য একের পর এক নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে আসছেন।এবার ফের এক এমন প্রকল্প নিয়ে এসেছেন যার ফলে আপনি বিরাট উপকৃত হতে চলেছেন। কেননা রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পরেন সাধারণ কিছু নথি দিয়ে।এক্ষেত্রে আপনাকে শুধু পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে সঙ্গে ব্যবসা করতে আগ্রহী বা আগে থেকে ব্যবসায়ী। চলুন আজকের এই প্রতিবেদনে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করা হল
ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প কী?
আমরা সকলে জানি ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ বা WBBCC Scheme হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি উদ্যোগ, যেখানে রাজ্যের ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদেরকে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে ব্যবসায়িক লোন প্রদান করা হয়ে থাকে।
সম্পর্কিত পোস্ট
ফের রাজ্য কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি! দীপাবলিতে সুসংবাদ কর্মীমহলে। জানুন বিস্তারিত - WB Salary Hike 2025এই স্কিমের বিশেষ দিক হলো—
- এক্ষেত্রে আবেদনকারীর কোনো গ্যারান্টর লাগবে না,
- সরকারি অনুমোদনের ভিত্তিতে ব্যাংক থেকে সহজ ঋণ পাওয়া সম্ভব হয়ে থাকে
- এবং ঋণের একটি অংশ সরকার নিজেই বহন করে থাকে।
এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছে West Bengal Backward Classes Commission (WBBCC), যা রাজ্যের উদ্যোক্তা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই স্কিমের মূল বৈশিষ্ট্য
বিষয় বস্তু | বিবরণ |
---|---|
স্কিমের নাম কি | ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড (WBBCC Scheme 2025) |
পরিচালন সংস্থা | পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা |
সর্বোচ্চ ঋণ পরিমাণ | ₹৫,০০,০০০ পর্যন্ত সর্বাধিক |
সরকারি অনুদান | মূলধনের ১০% দিতে পারে |
আবেদন প্রক্রিয়া | অনলাইন মাধ্যমে আবেদন করুন |
যোগ্য বয়সসীমা | ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়স থাকতে হবে |
প্রযোজ্য ক্ষেত্র | ব্যবসা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ট্রেডিং, কৃষি ইত্যাদি থাকতে হবে |
কাদের জন্য এই স্কিম?
রাজ্য সরকারের এই স্কিমের মূল লক্ষ্য হলো—যে সব যুবক-যুবতী নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে চান বা কোনো দক্ষতা নির্ভর উদ্যোগ গড়ে তুলতে আগ্রহী হন, তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করা হতে পারে ।
যাঁরা এই স্কিমে আবেদন করতে পারবেন:
- পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে
- বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে থাকতে হবে
- যারা নতুন ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী
- যারা ইতিমধ্যে ছোটখাটো উদ্যোগ চালাচ্ছেন এবং সেটি বাড়াতে চান,
- মহিলা উদ্যোক্তারা, যাঁরা স্বনির্ভর হতে চাই তাদের জন্য
কী কাজে ব্যবহার করা যাবে এই ঋণ?
এই প্রকল্পের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ ব্যবহার করা যাবে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে:
- নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য দেওয়া হয়ে থাকে।
- বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য দেওয়া হয়।
- ক্ষুদ্র শিল্প (MSME) খাতে বিনিয়োগের জন্য দেওয়া হয়
- ট্রেডিং, দোকানদারি বা সার্ভিস সেক্টর উন্নয়নের লক্ষ্যে
- কৃষিভিত্তিক উদ্যোগ বা কৃষি পণ্যের ব্যবসার জন্য।
- স্কিল ডেভেলপমেন্ট বা প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণের জন্য দেওয়া হয়।
এই স্কিমের সুবিধাসমূহ
১. এক্ষেত্রে সহজ আবেদন প্রক্রিয়া – অনলাইনে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে আবেদন করতে পারবেন, কোনো অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
২. ৫ লক্ষ টাকার ঋণ – রাজ্যের তরুণরা সর্বোচ্চ ₹৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন, যা ব্যবসা শুরু করার জন্য যথেষ্ট সহায়ক হয়ে থাকে।
৩. ১০% সরকারি অনুদান – উদাহরণস্বরূপ, ₹৪ লক্ষ টাকার ব্যবসা শুরু করলে সরকার ₹৪০,০০০ অনুদান দেবে এবং বাকি ₹৩.৬ লক্ষ ঋণ হিসেবে দিয়ে থাকে।
৪. মহিলাদের জন্য বিশেষ ছাড় – মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য অতিরিক্ত অগ্রাধিকার এবং কিছু ক্ষেত্রে কম সুদের সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে।
৫. কোনো জামানত লাগবে না – সম্পত্তি বা গ্যারান্টার ছাড়াই ঋণ মঞ্জুর করা হবে, যা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে হয়ে থাকে।
আবেদনের যোগ্যতা ও শর্তাবলী
শর্ত সমূহ | বিস্তারিত |
---|---|
নাগরিকত্ব | পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে (কমপক্ষে ১০ বছর) |
বয়সসীমা | ১৮ থেকে ৪৫ বছর মধ্যে থাকতে হবে |
সরকারি চাকরি | সরকারি কর্মচারীরা আবেদন করতে পারবেন না |
পূর্ববর্তী ঋণ | পুরোনো কোনো ঋণ শোধ না থাকলে আবেদন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে |
আয় | নির্দিষ্ট আয় সীমা নেই, তবে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা দেখাতে হবে |
প্রয়োজনীয় নথিপত্র সমূহ
এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নথির প্রয়োজন রয়েছে
- আবেদনকারীর আধার কার্ড
- ভোটার আইডি
- প্যান কার্ড
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ঠিকানার প্রমাণ
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস (IFSC সহ)
- ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকতে হবে বা তৈরি করতে হবে
এর জন্য কীভাবে আবেদন করবেন – ধাপে ধাপে নির্দেশিকা
ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে– https://bccs.wb.gov.in
ধাপ ২: “New Registration” অপশন নির্বাচন করতে হবে ।
ধাপ ৩: নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ইমেল ইত্যাদি দিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হবে ।
ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
ধাপ ৫: ব্যবসার পরিকল্পনা বা প্রকল্প রিপোর্ট আপলোড করুন (ছোট বিবরণ হলেই চলবে)।
ধাপ ৬: সব তথ্য যাচাই করে “Submit” করুন এবং Reference ID নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে।
টাকা কবে পাবেন?
এক্ষেত্রে আবেদন জমা দেওয়ার পর সরকারী ভাবে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হলে অনুমোদনের ১৫–২০ দিনের মধ্যেই অর্থ আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়ে থাকে।
কেন এই প্রকল্প এত গুরুত্বপূর্ণ
আমরা সকলে জানি আজকের দিনে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারি পদ সীমিত রয়েছে এবং প্রতিযোগিতা বিপুল আছে। তাই রাজ্য সরকার এই স্কিমের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে আত্মনির্ভরশীল করার জন্য কাজ করছেন।
যার ফলে শুধু ব্যবসা বাড়বে না, নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে, যা রাজ্যের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
একটি উদাহরণে বুঝুন লাভের হিসেব
উদাহরণ স্বরুপ ধরুন আপনি ₹৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী। সরকার এর মধ্যে ₹৫০,০০০ অনুদান হিসেবে দিয়ে দিলেন। অর্থাৎ, আপনাকে ঋণ শোধ করতে হবে ₹৪.৫ লক্ষ টাকার মতো প্রায়। এতে সুদ এবং EMI-এর চাপ অনেকটাই কমে যাবে, যা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক হতে পারে।
তাই আগ্রহী হলে আজই ভিজিট করুন: https://bccs.wb.gov.in
নিজেকে বদলান, নিজের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে নয়া পদক্ষেপ নিন।