বড় জয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের! অবশেষে ডিএ বৃদ্ধি, কার্যকরের সময়সীমা বেধে দিল সুপ্রিম কোর্ট – WB DA Update In Supreme Court 2025
অবশেষে আকাশে বাতাসে খুশির বাতাস। সরকারি কর্মীদের জন্য বিরাট সুসংবাদ। বড় জয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের! অবশেষে ডিএ বৃদ্ধি, কার্যকরের সময়সীমা বেধে দিল সুপ্রিম কোর্ট - WB DA Update In Supreme Court 2025
WB DA Update In Supreme Court 2025: পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারীদের জন্য এল বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির খবরে ভরপুর শুক্রবার। ১৮ বার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে ১৬ মে ২০২৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে উঠে এল রাজ্যের বকেয়া ডিএ মামলা। আর সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্ব্যর্থহীন নির্দেশ— রাজ্য সরকারকে সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কী এমন নির্দেশ দিল যার কারনে রাজ্য কঠিন চাপের মধ্যে পড়লো। আসুন আজকের প্রতিবেদনে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আজকের এই নির্দেশের পর রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ফের একবার আশার আলো দেখা দিয়েছে। বহু দিন ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন রাজ্য কর্মচারীরা— অবশেষে শীর্ষ আদালতের রায়ে কিছুটা হলেও সুরাহা মিলল। যার ফলে আকাশে বাতাসে খুশির বাতাস বইতে শুরু করেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, আরও বড় সিদ্ধান্তের অপেক্ষা রয়েছে অগস্ট মাসে। চলুন বিশদে জেনে নেওয়া যাক এই মামলার যাবতীয় দিক ও প্রতিক্রিয়া।
সম্পর্কিত পোস্ট
এক রিচার্জে সারা বছর আনলিমিটেট পরিষেবা জিও-র, অফার হাতছাড়া নয়! Jio 1 Yaer Unlimited Offer 2025কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই ডিএ মামলা?
আমরা অনেকেই জানি, ২০১৯ সালের পর থেকেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। বর্তমানে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা যেখানে ১৮ শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা পান, সেখানে কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা পান ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ। এই বিশাল ফারাক ঘোচানোর দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়।
তাই ২০২২ সালের ২০ মে কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ৩১% ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে দারস্থ হয়। তারপর থেকেই শুরু হয় টানাপোড়েন।
শীর্ষ আদালতের ১৬ মে-র রায় কী বলছে?
১৬ মে ২০২৫-এ বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্য সরকারকে অন্তত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ চার সপ্তাহের মধ্যে কর্মচারীদের হাতে তুলে দিতে হবে। যদিও আদালত শুরুতে ৫০ শতাংশ বকেয়া ডিএ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, কিন্তু রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, এত অর্থ একসঙ্গে মেটানো সম্ভব নয়, রাজ্য চালানোই মুশকিল হয়ে যাবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২৫ শতাংশেই স্থির থাকে এবং পরে আরও জানায়, আগামী অগস্ট মাসে মামলার পরবর্তী ও চূড়ান্ত শুনানি হবে।
কী বলছেন মামলাকারী ও আন্দোলনকারীরা?
মামলাকারী আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, “রাজ্য বলেছে ৫০% দিলে কোমর ভেঙে যাবে, কিন্তু এই সরকারের কোমর তো আগেই ভেঙে গেছে।”
এদিকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ প্রমাণ জানালাম, মহার্ঘভাতা আমাদের অধিকার। এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই।”
এখন কী হতে চলেছে? পরবর্তী পদক্ষেপ কী রাজ্যের?
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ মানতে গেলে রাজ্যকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ-এর একটি বড় অংশ মেটাতে হবে। এর জন্য প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, যদি রাজ্য এই অর্থ দিতে না পারে, তবে রাজস্ব ঘাটতি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কর্মচারীদের দাবি, এত দিন বঞ্চিত থাকার পরে এটাই ন্যায্য পাওনা তাদের।
এই রায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক
- বড় সিদ্ধান্ত: সুপ্রিম কোর্টের মতো শীর্ষ আদালতের গুরুত্বপূর্ণ রায়।
- জনস্বার্থে গুরুত্ব: লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর জীবন ও আর্থিক স্থিতি এতে জড়িত।
- রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: শাসক-বিরোধী তরজায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
- পরবর্তী শুনানি: অগস্টে আসছে আরও বড় সিদ্ধান্ত, যা জনজাগরণ বাড়াবে।
- আর্থিক প্রভাব: রাজ্য অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণ।
আজ, ১৬ মে-র ২০২৫ সুপ্রিম কোর্টের রায় নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কিন্তু এখনও লড়াই শেষ হয়নি। এদিকে আরও অগস্ট মাসে চূড়ান্ত শুনানির দিকে তাকিয়ে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। তারা চান সম্পূর্ণ বকেয়া ডিএ এবং কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘভাতা।
এই মামলার রায় কেবল অর্থের বিষয় নয়— এটি ন্যায্যতার, অধিকার আর সম্মানের প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর পাবে অগস্টে। তার আগে এই চার সপ্তাহ রাজ্য সরকারের জন্য কঠিনতম চ্যালেঞ্জ।