লক্ষীর ভান্ডার নিয়ে বড় আপডেট, ভাতা বৃদ্ধি, একাউন্টে টাকা কবে, বাদ পরেছেন কী? – WB Lashmir Bhandar May 2025 Update
WB Lashmir Bhandar May 2025 Update: লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প হল পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। রাজ্যের অনেক বাসিন্দা রয়েছে বিশেষ করে মহিলারা যারা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন তারা প্রত্যেক মাসে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্যে এর দিকে চেয়ে থাকে। রাজ্য সরকার যদিও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের জনামতী প্রকল্প নিয়ে এসেছেন কিন্তু তার মধ্যে অন্যতম হলো লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে রাজ্যের কয়েক কোটি মহিলার সুবিধা নিচ্ছেন। রাজ্যের এই প্রকল্পের প্রশংসাই রাজ্য সরকার বেশ কয়েকবার সাধুবাদ পেয়েছেন।
বর্তমানে রাজ্য সরকার রাজ্যের প্রতিটি মহিলা যাদের বয়স ২৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তাদের প্রতিমাসে আর্থিক সাহায্য বাবদ সাধারণ মহিলাদের জন্য ১০০০ টাকা এবং সংরক্ষিত মহিলাদের জন্য ১২০০ টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয় এই টাকা প্রতি মাসে প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে একাউন্টে ক্রেডিট হয়ে যায়। আজকের এই প্রতিবেদনে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা ক্রেডিট হওয়া নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। যারা এই সংক্রান্ত তথ্য পেতে চাই তারা শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
সম্পর্কিত পোস্ট
এক রিচার্জে সারা বছর আনলিমিটেট পরিষেবা জিও-র, অফার হাতছাড়া নয়! Jio 1 Yaer Unlimited Offer 2025লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য কি ?
আমরা সকলে জানি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘোষণা করা এই প্রকল্পের লক্ষ্যই ছিল রাজ্যের ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী গৃহবধূদের মাসিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। মূলত গৃহিণীদের আর্থিক ক্ষমতায়ন এবং আত্মনির্ভর করে তোলাই ছিল রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য।
আর এদিকে বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় সাধারণ শ্রেণির মহিলারা পান প্রতি মাসে ₹১০০০, আর তফশিলি জাতি (SC) ও উপজাতি (ST) মহিলারা পান ₹১২০০।
২০২৫ সালের মে মাসে টাকা মিলবে কারা কারা?
মে মাসেও নিয়ম মতো ১১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা রাজ্যের মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা শুরু হয়েছে। তবে যারা নিচের সমস্যাগুলোর মধ্যে পড়ছেন, তাদের টাকা আসতে দেরি হতে পারে বা টাকা আটকে যেতে পারে—
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে।
- আধার ও মোবাইল নম্বরের মধ্যে গরমিল।
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আধারের সঙ্গে লিঙ্ক করা নেই।
এই সমস্ত সমস্যার সমাধান না হলে টাকা ব্যাঙ্ক একাউন্টে ঢুকবে না। যার ফলে এই ধরণের গ্রাহকদের দ্রুত “দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে” গিয়ে বা সরাসরি ব্লক অফিসে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে।
অনেকের নাম বাদ পড়ছে কেন?
সম্প্রতি একটি সরকারি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের তালিকা থেকে অনেকের নাম বাদ পরে যাচ্ছে। সাধারণত তিনটি বড় কারণ আছে:
- আধার নম্বর ও মোবাইল নম্বরের তথ্যের অসামঞ্জস্য।
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ বা নিষ্ক্রিয়।
- বয়স ৬০ বছরের বেশি হওয়া। কারণ ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য রয়েছে আলাদা সামাজিক পেনশন প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এই কারণে যাদের নাম বাদ গেছে, তাদের ফের তালিকাভুক্তির জন্য স্থানীয় ক্যাম্পে বা ব্লক অফিসে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা কি বাড়ছে?
এখনও পর্যন্ত ২০২৫ সালের রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বাড়ানোর কোনও ঘোষণা হয়নি রাজ্য সরকারের তরফে। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা আরও বাড়তে পারে।
একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে , ভবিষ্যতে সাধারণ শ্রেণির মহিলারা পেতে পারেন ₹১৫০০, এবং তফশিলি জাতি-উপজাতির মহিলারা পেতে পারেন ₹১৮০০ পর্যন্ত। যদিও রাজ্য সরকার এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কিছু ঘোষণা করেনি বা কোনো যথাযথ তথ্য কিনা যাচাই করা হয়নি।
বর্তমানে রাজ্যজুড়ে উপভোক্তার সংখ্যা কত?
এই মুহূর্তে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন কয়েক কোটি মহিলা। প্রতিনিয়ত নতুন উপভোক্তা যোগ হচ্ছেন এবং দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে বহু মহিলার আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে যদিও বর্তমানে ক্যাম্প বন্ধ রয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ভবিষ্যতে উপভোক্তার সংখ্যা আরও বাড়বে যদি পূনরায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্প আয়োজন করা হয়।
কীভাবে চেক করবেন টাকা এসেছে কিনা?
টাকা ব্যাঙ্কে আসার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহিলার রেজিস্ট্রার মোবাইল ফোনে একটি এসএমএস চলে আসে। তাছাড়া আপনি নিজে ব্যাঙ্কে গিয়ে বা মোবাইল ব্যাঙ্কিং অ্যাপ/এটিএম থেকেও টাকা এসেছে কিনা এই সংক্রান্ত মিনি স্টেটমেন্ট দেখে নিতে পারেন।
যাদের সমস্যা হচ্ছে তাদের জন্য সমাধানের উপায়:
যদি কারও টাকা না আসে বা নাম বাদ যায়, তাহলে নিকটস্থ ‘ব্লক অফিসে’ গিয়ে নথিপত্র নিয়ে যোগাযোগ করুন। যে সমস্ত ডকুমেন্টস প্রয়োজনীয়—
- আধার কার্ড
- ভোটার কার্ড
- ব্যাঙ্ক পাসবই
- মোবাইল নম্বর
আমরা সকলে জানি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটা রাজ্যের অসংখ্য নারীর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য মাসিক ভরসা। রাজ্য সরকার নিয়মিত এই প্রকল্পে পরিবর্তন আনছে এবং উপভোক্তাদের সংখ্যা ও সুবিধা বৃদ্ধির চেষ্টা করেই চলেছেন। যদি আপনি উপভোক্তা হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার নথিগুলো ঠিকঠাক থাকলে মে মাসের টাকা আপনি নিশ্চিন্তে পেয়ে যাবেন।